তৈয়বুর রহমান কিশোর, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় জিন্দার আলী শেখ ওরফে পলাশকে (৩২) মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক প্রদীপ কুমার রায় এ আদেশ ঘোষণা করেন। একই সাথে আসামীকে এক লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
রায় ঘোষনার সময় আসামী জিন্দার আলী আদালতে হাজির ছিলেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার কদমী গ্রামের মো. মোসলেম মোল্যার মেয়ে ও স্থানীয় আবু জাফর সিদ্দিকীয়া মাদ্রাসার আলীম প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন রূপালী খানম। মাদ্রাসায় যাতায়াতের পথে বিভিন্ন সময় তাকে উত্ত্যক্ত করতো আসামী।
এক পর্যায়ে রূপালীর বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় জিন্দার আলী। সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২০১০ সালের ২০ মে রূপালী খানমকে ধর্ষণ শেষে কাচি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে জিন্দার। এই ঘটনায় নিহতের বাবা বাদি হয়ে বোয়ালমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলা তদন্তকালে আকলিমা নামের এক নারীকে আটক করে রিমান্ডে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদে কোন তথ্য না পাওয়ায় এই মামলায় আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ।
পরে বাদির নারাজি আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) কে দায়িত্ব দেয়। ডিবির উপপরিদর্শক শেখ আবু বক্কর মামলার তদন্তকালে আসামী জিন্দার আলী শেখকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে আসামী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে রূপালীকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেন।  গতকাল বুধবার সকালে রাষ্ট্র পক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. স্বপন পাল বলেন,
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জিন্দার আলী ওরফে পলাশ একজন কৃষক। সে পড়ালেখা জানতো না। রূপালি খানম মাদ্রাসায় যাতয়াতের পথে সে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতো। পরে তার বাড়িতে ঘটকও পাঠায়। কিন্তু রূপালির পরিবার এতে রাজি না হওয়ায় জিন্দার আলী ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ধর্ষণের পর গলাকেটে হত্যা করে।
মামলার ১১ বছর পর এ রায় হলো।   তবে আসামী পক্ষের আইনজীবী ধনঞ্জয় বল তাঁর মক্কেল নির্দোষ ও ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত হয়েছেন বলে দাবী করেন।